হাইপারসোনিক মিশাইল | ম্যাক নাম্বার : Download PDF

By Sumit Mazumder|Updated : March 21st, 2022

সম্প্রতি রাশিয়া প্রথমবারের মতো যুদ্ধে একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। এটি ইউক্রেনের একটি অস্ত্রভাণ্ডারকে ধ্বংস করেছে। হাইপারসনিক মিসাইলটির নাম 'Kinzhal'। Kinzhalকে MiG-31K ফাইটার জেট দ্বারা বহন করা হয়েছিল। এটি প্রায় 2011 কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার ক্ষমতা রাখে। এটির গতিবেগ বাতাসে শব্দের গতির প্রায় 10 গুণ বেশি।

এই নিবন্ধে, আমরা হাইপারসনিক মিসাইল প্রযুক্তির সমস্ত বিবরণ নিয়ে আলোচনা করব। এই নিবন্ধটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আপনার জ্ঞান উন্নত করতে সহায়তা করবে, যা WBCS এবং অন্যান্য WBP বা WBPSC পরীক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির মধ্যে একটি।

Table of Content

কেন খবরে হাইপারসনিক মিসাইল


2022 সালের 24 ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনের ওপর পূর্ণ মাত্রায় সামরিক হামলা শুরু করে রাশিয়া। সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেনের উপর Kinzhal নামে একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার ফলে ইউক্রেনের দক্ষিণে একটি জ্বালানী স্টোরেজ সাইট ধ্বংস হয়ে যায়।

এই প্রসঙ্গে আমাদের জানতে হবে, বিভিন্ন ধরণের এয়ারক্র্যাফট এর গতি সম্পর্কে। তবে গতি অনুযায়ী এয়ারক্র্যাফট এর বিভিন্নতাতে যাওয়ার আগে চলুন আমরা একটা কনসেপ্ট সম্পর্কে জানি, যার নাম "ম্যাক নাম্বার"।

ম্যাক নাম্বার কী?

আমার বায়ুর মধ্যে শব্দের গতিবেগ হয়ত অনেকেই জানি। 0°C উষ্ণতায় বায়ুতে শব্দের গতিবেগ প্রায় 332 মিটার/সেকেন্ড। তবে উষ্ণতা বাড়লে এই গতিবেগ বাড়তে পারে। 0°C উষ্ণতায় বায়ুতে শব্দের গতিবেগ প্রায় 343 মিটার/সেকেন্ড। 

এয়ারক্র্যাফটগুলির মধ্যে বেশ কিছু রয়েছে যারা বায়ুতে শব্দের গতিবেগের খুব কাছাকাছি গতিবেগ নিয়ে আকাশে ওড়ে। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত বেশ কিছু বিমান আছে যারা বায়ুতে শব্দের গতিবেগের থেকেও বেশি গতিবেগে আকাশে ওড়ে। বায়ুতে শব্দের গতির সাথে বিমানের গতির যে অনুপাত, সেটি কম্প্রেসিবিলিটি প্রভাবগুলির অনেকগুলির মাত্রা নির্ধারণ করার জন্য খুবই জরুরী। 

এই গতি অনুপাতের গুরুত্বের কারণে, বিজ্ঞানীরা এটিকে একটি বিশেষ প্যারামিটার দিয়ে নামকরণ করেছেন যা ম্যাক নম্বর নামে পরিচিত। 19 শতকের শেষের দিকে একজন পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি গ্যাস গতিশীলতা অধ্যয়ন করেছিলেন, তার নাম অনুসারে এই নামকরণ করা হয়েছে। এই ম্যাক নম্বরকে আমরা 'M' অক্ষর দিয়ে চিহ্নিত করে থাকি।

ম্যাক নাম্বার অনুযায়ী এয়ারক্র্যাফট গুলির বিভিন্নতা

  • সাবসনিক (Subsonic): এটি দেখা যায় সেই সমস্ত এয়ারক্র্যাফটগুলির ক্ষেত্রে যাদের ম্যাক নাম্বার 1 এর থেকে কম (M < 1)। বা অন্যভাবে বললে বোঝায় যাদের গতিবেগ বায়ুতে শব্দের গতিবেগের থেকে কম।
  • ট্রান্সনিক (Transonic): এয়ারক্র্যাফটের গতি শব্দের গতির কাছাকাছি হলে, ম্যাক নম্বর হয় প্রায় M = 1 এর সমান, এবং প্রবাহটি ট্রান্সনিক বলা হয়।
  • সুপারসনিক (Supersonic): এয়ারক্র্যাফটের গতি বায়ুতে শব্দের গতির থেকে বেশি হলে, ম্যাক নম্বর হয় 1 < M < 3 হলে সেই এয়ারক্র্যাফটের গতিকে সুপারসনিক বলে। 

নোট: সনিক বুম হ'ল শক তরঙ্গের সাথে যুক্ত একটি শব্দ যা তৈরি হয় যখন কোনও বস্তু শব্দের গতির চেয়ে দ্রুত বাতাসের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে। সনিক বুম প্রচুর পরিমাণে শব্দ শক্তি উৎপন্ন করে, যা মানুষের কানে একটি বিস্ফোরণ বা বজ্রপাতের মতো শোনায়। 

  • হাইপারসনিক (hypersonic): যদি M > 5 হয় সেক্ষেত্রে সেই এয়ারক্র্যাফটের গতিকে হাইপারসনিক বলা হবে। 

নোট: যদি M ~ 25 তবে একে হাই হাইপারসনিক বলা হবে।এই পরিস্থিতিতে, উত্তপ্ত বায়ু একটি আয়নযুক্ত প্লাজমা তে পরিণত হয় এবং এর জন্য যানটিকে অবশ্যই উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করার মত ক্ষমতা থাকা উচিত।

হাইপারসনিক মিসাইল

একটি হাইপারসনিক মিসাইল শব্দের গতির চেয়ে পাঁচগুণ দ্রুতগতিসম্পন্ন এবং M > 5 (3,800 মাইল প্রতি ঘণ্টা)। হাইপারসনিক মিসাইলকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়: হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল এবং হাইপারসনিক গ্লাইড মিসাইল। 

  • হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল: একটি হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল একটি উচ্চ গতির জেট ইঞ্জিন ব্যবহার করে তার লক্ষ্যে পৌঁছায় যা মিসাইলকে ম্যাক -5 এর চেয়ে বেশি গতিতে ভ্রমণ করতে সাহায্য করে।
  • হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকেল: একটি হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকেলতে, পুনরায় প্রবেশের যানবাহন ব্যবহার করা হয়।

কোন কোন দেশ হাইপারসনিক মিসাইল তৈরি করছে?

  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ভারত এবং চীন সহ অনেক বিশ্বব্যাপী শক্তি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে।
  • রাশিয়া হল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম ব্যবহারকারী ও বৈশ্বিক নেতা।

হাইপারসনিক মিসাইল টেকনোলজিতে ভারত

  • ভারত কয়েক বছর ধরে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে এবং বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনকে পিছনে ফেলে চলেছে।
  • 2020 সালের সেপ্টেম্বরে, DRDO সফলভাবে একটি হাইপারসনিক টেকনোলজি ডিসপ্লেড ভেহিকেল (HSTDV) পরীক্ষা করেছে এবং তার হাইপারসনিক এয়ার-ব্রিদিং স্ক্রামজেট প্রযুক্তি প্রদর্শন করেছে।
  • ম্যাক 7 হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্রাহ্মোস-II এর উন্নয়নে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করেছিল ভারত।

Kinzhal, ইউক্রেনে রাশিয়া দ্বারা ব্যবহৃত উন্নত হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র কি?

সম্প্রতি রাশিয়া তার নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে যার নাম 'Kinzhal'। ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা প্রায় 1,500-2,000 কিলোমিটার এবং এটি পেলোড বা 480 kg পেলোড বহন করার ক্ষমতা রাখে। Kinzhal-র দৈর্ঘ্য প্রায় 8 মিটার, ব্যাস প্রায় 1 মিটার। Kinzhal মানে dagger। উৎক্ষেপণের পর Kinzhal ঘণ্টায় 4,900 কিমি বেগে শুরু করে এবং ঘণ্টায় 12,350 কিমি বেগে পৌঁছাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। 

হাইপারসোনিক মিশাইল | ম্যাক নাম্বার : PDF

WBCS দৈনিক, সাপ্তাহিক, এবং মাসিক কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স| পিডিএফ ডাউনলোড করুন

WBCS Prelims Study Plan 2022: Daily Revision

Join Byju's Exam Prep WBPSC Telegram Channel

BYJU’S Exam Prep WBPSC Youtube Channel

 

Comments

write a comment

FAQs

    • Science & Technology For Civil Services Exams – Ravi P Agrahari.
    • Science and Technology in India – Kalpana Rajaram – Spectrum.
  • বিমান যদি শব্দের বেগের চাইতেও দ্রুত (Supersonic speed) চলা শুরু করে তবে এটি বাতাসে সঙ্কোচন-প্রসারণ সৃষ্টি করে এবং সেটা সঞ্চালিত হয়ে যাবার আগেই বিমানটি আরও সামনে অগ্রসর হয়ে নতুন সঙ্কোচন-প্রসারণ সৃষ্টি করে, যার ফলাফল হচ্ছে তীব্র শব্দ, যা ২০০ ডেসিবেলের চাইতেও বেশি হতে পারে।

  • আভুল পাকির জয়নুলাবেদিন আবদুল কালাম একজন ভারতীয় পরমাণু বিজ্ঞানী ছিলেন যিনি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একাদশ রাষ্ট্রপতি (২০০২ - ২০০৭) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।  ভারতের অসামরিক মহাকাশ কর্মসূচি ও সামরিক সুসংহত নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশযানবাহী রকেট উন্নয়নের কাজে তার অবদানের জন্য তাকে ‘ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মানব’ বা ‘মিসাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়া’ বলা হয়।

Follow us for latest updates